Skip to main content

মোদি দুর্নীতিগ্রস্ত, লোকসভা 
ভোটে ফের হারাব: রাহুল

নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর: আজ হারিয়েছি। লোকসভা ভোটেও হারাব। বললেন রাহুল গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁকে মানুষ আর বিশ্বাস করে না। তিনি যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার একটিও পূরণ করেননি। শুধু তাঁর জন্যই বিজেপি পরাজিত হল। রাহুল আজ মোদিকেই দায়ী করেছেন বিজেপির হারের জন্য। বলেন, এই জয় আমার নয়। এই জয় কৃষকের, দলিত আদিবাসীর, যুব সমাজের। এই জয় জণগণের। আমার নয়। বিস্ময়করভাবে রাহুল একবারও বললেন না যে, এই জয় রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের রায়। উল্টে তিনি বললেন, তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অবশ্যই অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। আর আশ্বস্ত করছি যে, তাঁদের শুরু করা কাজ আমাদের সরকার এগিয়ে নিয়ে যাবে। রাহুল আজ বিজেপির পরাজয়ের জন্য দায়ী করেন নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকারের কৃতকর্মকে। তিনি বলেন, মানুষ মোদি সরকারের কাজকর্মে ক্ষুব্ধ। রাহুল বলেন, নরেন্দ্র মোদি আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর ঔদ্ধত্য, তাঁর অহঙ্কার, তার জেরে মানুষের ক্ষোভ দেখে শিখেছি কীভাবে আচরণ করা উচিত। মোদি হারবেন তাঁর অহঙ্কারের জন্য। 
আজকের দিনেই গত বছর রাহুল নির্বাচিত হন কংগ্রেসের সভাপতি পদে। সুতরাং নেতৃত্বগ্রহণের বর্ষপূর্তিতে এহেন এক মেগাজয়ের উপহার দিয়ে তিনি নিজে পেলেন বহু কাঙ্ক্ষিত আত্মবিশ্বাস। দলকে দিলেন সম্মানজনক অক্সিজেন। তাঁকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করে খরচের খাতায় ফেলে রাখা যে ভুল হয়েছিল আজ বিজেপি নেতারা তা উপলব্ধি করছেন। বিগত চার বছরে তাঁকে লাগাতার শুনতে হয়েছিল তাচ্ছিল্যভরা সম্বোধন-পাপ্পু! ২০১৪ সাল থেকে টানা পরাজিত হয়েছে তাঁর দল। বিজেপি প্রতিটি জয়ের পর হাসতে হাসতে বলেছিল, যতদিন রাহুলবাবা আছেন, ততদিন চিন্তা নেই। এমনকী কংগ্রেসের মধ্যে থেকেও দাবি উঠেছে প্রিয়াঙ্কা লাও, কংগ্রেস বাঁচাও! কিন্তু রাহুল সেই অসম্মানকে অগ্রাহ্য করে পাখির চোখের মতো একটি ইস্যুকে সামনে রেখে পদযাত্রা করেছেন, সমাবেশ করেছেন। সেটি হল কৃষক সঙ্কট। বারবার ভোট এসেছে, কংগ্রেস হেরে গিয়েছে। কিন্তু রাহুল নব উদ্যমে সেই কৃষক সমস্যা নিয়েই আরও আগ্রাসী হয়েছেন। যে রাহুল ছিলেন লাজুক আর অন্তর্মুখী, তাঁর মধ্যেই আগ্রাসী ভঙ্গি দেখা গেল। রাহুল সরাসরি রাফাল থেকে নোটবাতিল, সবকিছুতেই মোদিকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে আক্রমণ করছেন। হাওয়া ঘুরতে শুরু করে পাঞ্জাব থেকে। এরপর গুজরাত। বস্তুত মোদির দুর্গে গিয়ে তাঁর রাজ্য দখলের জন্য ক্যাম্প করে ছিলেন রাহুল। গুজরাতে কংগ্রেস আশাতিরিক্ত ভালো ফল করেছে। বিজেপি কোনওমতে সরকার গড়ে। তারপর কর্ণাটক জয়। আর আজ হিন্দিভাষী তিন রাজ্য দখল। রাহুল ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন অবশেষে। শতাব্দীপ্রাচীন দলকে লোকসভায় সর্বনিম্ন আসন প্রাপ্তির লজ্জা উপহার দিয়েছিলেন তিনি। সেই লজ্জার অবসান ঘটিয়ে আগামী লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের পুনরুত্থান ঘটাতে পারবেন রাহুল? এবার হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জ। পারবেন কি রাহুল কংগ্রেসের একদা কাণ্ডারিদের যোগ্য উত্তরসূরি হতে?

৫ রাজ্যেই বিজেপির ভরাডুবি
রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের জয়
 সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর: নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের প্রিয় স্লোগান কংগ্রেস মুক্ত ভারত আপাতত দূর অস্ত! উল্টে হিন্দি বলয়ে চূড়ান্ত ভরাডুবি হল শাসক বিজেপি’র। ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রের সর্ববৃহৎ দুই রাজ্যসহ তিনটি সরকারই হাতছাড়া হল। থমকে গেল দেশের মানচিত্রের গেরুয়াকরণের প্রবণতা। ১৫ বছর পর মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে ফিরে আসছে কংগ্রেস। পাঁচ বছর আগের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে রাজস্থানেও সরকার গড়ছে তারা। তেলেঙ্গানায় বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি। দক্ষিণ ভারত নয়, পূর্ব ভারত নয়, খোদ বিজেপির গড় হিন্দিভাষী আর্যাবর্তের তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য থেকে এভাবে উৎখাত হওয়া মোদি-অমিত শাহ’র কাছে বিরাট ধাক্কা। ঠিক লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এই তিন রাজ্যের পরাজয়ের ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী মোদি ম্যাজিক অবশেষে সমাপ্ত?

Comments

Popular posts from this blog