Skip to main content
 

বিজেপি’র শেষের শুরু, বাকি 
রাজ্যেও ওরা হারবে: মমতা

সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর: ‘কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার কাউন্টডাউন শুরু। ২০১৯, বিজেপি ফিনিশ।’ পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের জেরে আজ এই মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘সেমিফাইনালই ইঙ্গিত দিয়ে দিল লোকসভা ভোটে কী হতে যাচ্ছে। এটা বিজেপি’র শেষের শুরু। বাকি রাজ্যেও ওরা হারবে’। এরপরেই মমতা তাঁর ফেডারেল ফ্রন্টের প্রসঙ্গ তোলেন। গতকাল মহাজোটের বৈঠকে যোগ দিতেই দিল্লি এসেছেন তৃণমূলনেত্রী। মহাজোটের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে তিনি গতকাল বেশ কিছু প্রস্তাবও দিয়েছেন। 
তবে এরপরেও রাজ্যে যে তিনি একা লড়বেন, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন। রাজ্যস্তরে যে যেখানে শক্তিশালী সেখানেই তাঁকে অন্য দলগুলির সমর্থন দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘বাংলায় আমরা একাই লড়ব। তবে কেন্দ্রে বিরোধী জোটেই আছি। ফেডারেল ফ্রন্ট স্ট্রং হলেই ভারত শক্তিশালী হবে।’ মমতা বলেন, ‘আর মাস দুয়েকের মধ্যেই লোকসভা ভোটের ঘণ্টা বেজে যাবে। মে মাসে এই সরকারের মেয়াদ শেষ। আর ফিরতে হবে না।’ 
পাঁচ রাজ্যে বিরোধীদের জয়কে গণতন্ত্রের জয় বলে মন্তব্য করেই নরেন্দ্র মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বড্ড উদ্ধত হয়ে উঠেছিল ওরা। অহঙ্কারী হয়ে গিয়েছিল। কেউ বিরোধিতা করলেই এজেন্সি দিয়ে শাসাচ্ছিল। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার এক্কেবারে সর্বনাশ করে ছেড়েছে। দেশজুড়ে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিল। কিন্তু মানুষ তার উচিত জবাব দিয়েছে। সবক শিখিয়ে দিয়েছে।’ মন্তব্য করেন মমতা। 
বলেন, ‘ছত্তিশগড়ে হার বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা। মধ্যপ্রদেশেও তাই। রাজস্থানও হাতছাড়া। হিন্দি বলয়ের তিনটি বড় রাজ্যেই ধাক্কা খাওয়া পর বিজেপির আর রইল কি?’ পাঁচ রাজ্যের কোথাওই তৃণমূল প্রার্থী না দিলেও আদতে কংগ্রেসের এই জয়কে বিজেপি বিরোধী জোটের জয় বলেই অভিহিত করেন তৃণমূলনেত্রী। বলেন, ‘আমরা সবাই সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তৈরি হচ্ছি। তাই পাঁচ রাজ্যে তৃণমূল সরাসরি না লড়লেও কংগ্রেসের জয় আদতে বিরোধীদেরই জয়। মানুষের জয়। মানুষই ম্যান অব দ্য ম্যাচ।’ 
মমতা বলেন, দক্ষিণে বিজেপির কিছু নেই। উত্তর-পূর্ব ছোট রাজ্য। পূর্বে পশ্চিমবঙ্গে পা’ই ফেলতে দেব না। ওড়িশায় হারবে। হিন্দি বলয়ে হেরে গেল। ফলে জিতবে কোথা থেকে? বাকি রাজ্যগুলিতেও হারবে। তাই দু’হাজার উনিশেই বিজেপি খতম।’ বিজেপিকে হারানোর জন্য এদিন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীকে মোবাইল বার্তায় তিনি শুভেচ্ছা জানান। তেলেঙ্গানায় নিজের জয় ধরে রাখার পাশাপাশি বিজেপিকে আটকে দেওয়ায় টিআরএস সুপ্রিমো কে সি আরকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতা। 
মমতার মতে নোটবন্দির ঘোষণাই ছিল বিজেপির পতনের শুরু। তারপর জিএসটি। আর এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের ইস্তফা। তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘নোটবন্দির সময় সবার আগে আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। আর এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কে যা হল, তা দেশে অর্থনৈতিক ইমার্জেন্সি। মানুষের শেষ সম্বল টাকা যার কাছে থাকে, সেই আরবিআই’কেই নড়বড়ে করে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। যা স্বাধীন ভারতে এর আগে কোনওদিন হয়নি।’ পাঁচ রাজ্যের বিজেপির হারকে মোদি-অমিত শাহকে মোক্ষম ‘শিক্ষা’ বলেই মনে করেন মমতা। বলেন, এরা বুঝুক, মানুষের উপর অত্যাচার, ভয় দেখানো, প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা, বিরোধীদের পিছনে এজেন্সির অপব্যবহার করলে আদতে মানুষই জবাব দিয়ে দেয়। আজ যা হয়েছে, লোকসভাতেও তাই হবে। বিজেপি হারবে। বিরোধীরা জিতবে।

Comments

Popular posts from this blog