Skip to main content

নেতা বাছতে আজই বৈঠকে বসছেন জয়ী বিধায়করা
রাজস্থান কংগ্রেসের, এবার চর্চা 
সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়েই

জয়পুর ও নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর (পিটিআই): প্রত্যাশামতোই রাজস্থানের ভোটারদের রায় গেল কংগ্রেসের পক্ষে। ২০০ সদস্যের বিধানসভায় ভোট হয়েছে ১৯৯ আসনে। এর মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ১০২টি আসন। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে ৭১টি আসন। বিএসপি এবং অন্যান্যরা পেয়েছে যথাক্রমে ৬টি এবং ২০টি আসন। রাজস্থানে বিজেপির ভরাডুবির জন্য অনেকেই দায়ী করছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের (৬৫) প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই। কৃষক বিক্ষোভ, আনন্দপাল সিং সংঘর্ষের জেরে রাজপুতদের বিক্ষোভ, রাজ্যে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা, স্বঘোষিত গোরক্ষকদের তাণ্ডব এবং ‘পদ্মাবত’ নিয়ে বিক্ষোভ— এই ঘটনাগুলি মোটেই ভালো চোখে দেখেননি রাজস্থানের মানুষ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বসুন্ধরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেননি। একে বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বছরে ১৫ লক্ষ চাকরির স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে। তার উপর কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও রাজ্য সরকার সে বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকায় জনরোষ পুঞ্জিভূত হয়েছে। তাই, ‘মোদি ম্যাজিক’ কাজ করেনি। গণনা শুরু হওয়ার পরই ত্রিপুরা সুন্দরীর মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বসুন্ধরা। কিন্তু, তাতে দলের পরাজয় এড়াতে পারেননি।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর রাজস্থানে এবার জোর চর্চা শুরু হয়েছে সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম নিয়ে। আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিনিয়র কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট এবং রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান শচীন পাইলটের নাম। দলের নেতা বাছতে বুধবারই বৈঠকে বসছেন কংগ্রেসের জয়ী বিধায়করা। অশোক গেহলট এদিন জানিয়েছেন, ‘রাজস্থানে জয়ের বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। কংগ্রেসই এখানে সরকার গড়বে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করবেন দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং দলের নির্বাচিত বিধায়করা।’ তিনি বলেছেন, ‘প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার গ্রাফ এখন নিম্নমুখী। রাহুল গান্ধী সাধারণ মানুষের ন্যূনতম চাহিদার বিষয়গুলি তুলে ধরেই সাফল্য পেয়েছেন। উনি প্রথমে গুজরাতের নির্বাচনে মোদি এবং অমিত শাহকে কোণঠাসা করেছেন। একইভাবে ইস্যুভিত্তিক প্রচার চালিয়ে তিনি ছত্তিশগড়, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে দলকে বিপুল সাফল্য এনে দিলেন।’ দলের ফল প্রকাশের পর উচ্ছ্বসিত শচীন পাইলট বলেছেন, ‘মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। তাই আমরা রাজস্থানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পেরেছি। তবে, সমমনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’ ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় লোকদলের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের দুই জয়ী বিধায়কের ভোট যাবে কংগ্রেসের পক্ষেই। শচীন পাইলটের বিশ্বাস, তিন রাজ্যের এই সাফল্যের ধারা আগামী দিনে সারা দেশেই সংক্রামিত হবে। শচীন পাইলট মনে করিয়ে দেন, ‘এক বছর আগে আজকের দিনেই কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তিনটি রাজ্যে সাফল্য পাওয়ার চেয়ে ওঁর কাছে আর ভালো উপহার কী হতে পারে?’ প্রসঙ্গত, রাজস্থানের টঙ্ক এবং সর্দারপুরা আসনে জিতেছেন যথাক্রমে শচীন পাইলট ও অশোক গেহলট। বসুন্ধরা রাজে জিতেছেন ঝালরাপাটন কেন্দ্র থেকে। অন্যদিকে, কংগ্রেস প্রার্থী তথা ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে ‘ডিসকাস থ্রো’ ইভেন্টে সোনা জয়ী কৃষ্ণা পুনিয়া সাদুলপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। এদিন ভোটের ফল বেরতে শুরু হতেই উৎসাহী কংগ্রেস কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন রাজ্যের কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে। অন্যদিকে, বিজেপির দপ্তরে বসে টিভির পর্দায় চোখ রাখছিলেন হাতেগোণা কয়েকজন। তবে, বসুন্ধরা রাজে এবং রাজ্য বিজেপির প্রধান মদনলাল সাইনি এরই মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে ঘুরে যান। বিজেপির পরাজয়ের জন্য যেমন বসুন্ধরাকে দায়ী করা হচ্ছে, ঠিক তেমনই কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পিছনে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে ৪১ বছরের শচীন পাইলটকেই। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল ১৬৩টি আসন। আর কংগ্রেস মাত্র ২১টি আসনে জয়ী হয়েছিল। এরপরই রাহুল রাজ্যের দায়িত্ব তুলে দেন শচীন পাইলটের কাঁধে। তিনি কিন্তু, রাহুলকে হতাশ করেননি।

Comments

Popular posts from this blog