Skip to main content
শরীর ও স্বাস্থ্য
 

 চোখ নিয়ে পড়াশোনা

 প্রচুর কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে আই কেয়ার বা চক্ষু পরিষেবা। জানাচ্ছেন সুশ্রুত আই ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের অপ্টোমেট্রিস্ট ও সোশ্যাল প্রোজেক্ট হেড অভিজিত্‌ দাস।

প্রচুর কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে আই কেয়ার বা চক্ষু পরিষেবা। শুধু শহরে নয়, গ্রামগঞ্জেও। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কেউ এখন চশমার দোকানে চাকরি করছেন, কেউ চোখের হাসপাতালে চাকরি করছেন, কেউ আবার নিজের দোকান খুলে বসেছেন। 
বাস্তব চিত্রটা হল, এই রাজ্যেরই প্রত্যন্ত এলাকার একটি বড় সংখ্যার মানুষ সরকারি-বেসরকারি চোখের হাসপাতালে পৌঁছে চোখের নিয়মিত চিকিত্‌সা করান না। ফলে মানুষ খুব অল্প বয়সেই চোখের সমস্যায় পড়ছে। গ্রামে চক্ষু পরীক্ষা শিবির করে দেখা গিয়েছে, প্রচুর বাচ্চা চোখে ভালো দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু, তা নিয়ে তাদের বা বাবা-মায়েদের বিশেষ হেলদোলই নেই। 
সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে, দেশের জনসংখ্যার ১ শতাংশ মানুষের ৫০ পেরোলেই চোখে ভালো দেখতে পান না। সচেতনতার অভাব, দেরিতে চিকিৎসা শুরু করা ইত্যাদি নানা কারণে তাঁদের একাংশ অন্ধ হয়ে যান! তাই দরকার সচেতনতা, সময়ে চিকিৎসা শুরু করা। অতি অবশ্যই সেজন্য প্রয়োজন গ্রামেগঞ্জে চোখ সম্পর্কে প্রশিক্ষিত মানুষজনের সংখ্যা বাড়ানো। এমনই একটি প্রশিক্ষণের নাম ভিশন টেকনিশিয়ান ট্রেনিং। 
কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সুশ্রুত আই ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালের গোড়ায় ‘ভিশন টেকনিশিয়ান’-এর প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়। এক বছরের এই পাঠ্যক্রমের মূল প্রশিক্ষণ পর্ব হয় দু’মাসের। বাকি ১০ মাস হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কী করে চোখ দেখতে হয়, কী ভাবে চশমা বানাতে হয়, চশমার পাওয়ার কী করে বুঝতে হয়—এ সব তাঁদের শেখানো হয়। তারপর সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। 
আমরা দেখেছি, এই প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন যাঁরা চশমার দোকানে কাজ করছেন, তাঁদের অনেকেই এখন মাসে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার করছেন। যাঁরা চোখের হাসপাতালে চাকরি পাচ্ছেন, তাঁরা ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা, কী অনেকে তার বেশিও বেতন পাচ্ছেন। আর যাঁরা নিজের চশমার দোকান করছেন, তাঁদের ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার হচ্ছে।
প্রশিক্ষণ নিয়ে যাঁরা চশমার দোকান করছেন, তাঁদের চশমার ফ্রেম, লেন্স, কাচ কাটার হাতে চালানো যন্ত্র, চশমা পরীক্ষার জন্য ট্রায়াল বাক্স (যার ভিতরে বিভিন্ন ক্ষমতার লেন্স রাখা থাকে), ডিসটেন্স বাক্স (দূরে যার দিকে তাকিয়ে দৃষ্টিশক্তি মাপা হয়)-এ সবই দেওয়া হচ্ছে। এই কাজে সহযোগিতা করছে একটি লেন্স নির্মাতা সংস্থাও। শুধু চশমার দোকান খুলতে ইচ্ছুক যুবক-যুবতীদের বলা হচ্ছে, একটি ঘর ভাড়া নিতে। অনেকের আবার নিজস্ব দোকানঘর আছে। সেই ঘরের মাপ যেন ন্যূনতম ১০ ফুট বাই ১০ ফুট হয়। কারণ, দৃষ্টিশক্তি মাপার জন্য ডিসটেন্স বাক্স থেকে ন্যূনতম ১০ ফুট দূরে বসতে হয়। 
বলে রাখা ভালো, পূর্ব ভারতে ভিশন টেকনিশিয়ানদের এই প্রশিক্ষণ কেবলমাত্র সুশ্রুতের বহরমপুর, ডায়মন্ডহারবার, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর এবং বীরভূমে হয়। এছাড়া হাসপাতালের তরফে নিয়মিতভাবে প্রত্যেক গ্রামগঞ্জে শিবির করা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে চিকিত্‌সকেরা গ্রামের মানুষদের চোখ পরীক্ষা করে জানিয়ে দিচ্ছেন, কার, কোথায়, কী ধরনের অসুবিধা রয়েছে। প্রাথমিক সমস্যা থাকলে তার সমাধান হচ্ছে ওই ভিশন টেকনিশিয়ানদের করা স্থানীয় চশমার দোকানেই। সংস্থার পক্ষ থেকে ভিশন টেকনিশিয়ান (আই মিত্র অপটিশিয়ান) কোর্সটি সম্পর্কে জানার লিঙ্ক হল —
www.susrut.org/eyeymitra-optician-program আবেদনের জন্য দেখতে পারেন—    www.susrut.org/vision-technician-course-online-registration

Comments

Popular posts from this blog