Skip to main content

ড়ারে ঢুকে গেল ঘিয়ে ভাজা লাড্ডু, নেই আবির, ঝাঁ চকচকে বিজেপি অফিস শুনশান

দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর: ২০১৭ সালের মার্চ। স্থান নয়াদিল্লির অশোকা রোডে বিজেপির পূর্বতন কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ২০১৮ সালের মার্চ। স্থান নয়াদিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির নতুন সর্বভারতীয় পার্টি অফিস। প্রথমটিতে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যান্ড-তাসা পার্টি, আবির সহযোগে গেরুয়া শিবিরের কর্মী সমর্থকদের উল্লাস। দ্বিতীয়টিতে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বিজেপির নেতা, কর্মীদের উচ্ছ্বাসে কার্যত অবরুদ্ধ সংবাদমাধ্যম। আপাদমস্তক গেরুয়া আবির মেখে এক বিজেপি সমর্থক বলেছিলেন, আমাদের এই নতুন পার্টি অফিসটা দলের জন্য অত্যন্ত লাকি! দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের বিজেপির নয়া কেন্দ্রীয় কার্যালয় সত্যিই গেরুয়া শিবিরের জন্য সৌভাগ্যের প্রতীক কি না, তার তুল্যমূল্য বিচার করার জন্য আজ ওই একই জায়গাতে সংশ্লিষ্ট সমর্থকের দেখা পাওয়া যায়নি। শুধু ওই সমর্থক কেন! মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরাম — এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল কী হতে চলেছে, তা স্পষ্ট হতে বিজেপির সমর্থকেরা আর দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গমুখী হননি। সমর্থক নেই। গেরুয়া আবির, ব্যান্ড-তাসা পার্টি, লাড্ডু বিতরণ কিছুই নেই। ভিড় জমিয়েছেন শুধু সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। লোকসভার আগে সেমিফাইনালের যুদ্ধে দলের এহেন পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এদিন ছিল একেবারেই রঙহীন।
পার্টি অফিসের ঠিক পিছনেই মিডিয়া বাইট দেওয়ার জন্য আজ বিজেপি ক্যাম্প তৈরি করেছিল। সেখানে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার একটি পর্ব মিটিয়ে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন সারছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা শাহনওয়াজ হোসেন, সম্বিত পাত্র, অনিল বালুনিরা। তাঁদেরই একজন বললেন, যতই শেষ মুহূর্তে বিজেপিই সরকার গঠন করবে দাবি করি না কেন, ট্রেন্ড কিন্তু অন্য কথা বলছে। আক্ষরিক অর্থেই ভোটের এই প্রবণতা আজ দিনভর তাড়া করে বেরিয়েছে বিজেপি নেতাদের। বেলা যত গড়িয়েছে, ট্রেন্ড তত স্পষ্ট হয়েছে। এবং মুখ শুকিয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। দুপুর দেড়টা। বিজেপি পার্টি অফিসের তিনতলায় ৩১২ নং রুমে মহেশ শর্মার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করছিলেন বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। আচমকাই দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রামলালের ফোন। আলোচনায় বসতে চান। নিচে যেতে যেতে তাঁরা শুধু বলে গেলেন, দেখে যান, শেষমেশ ফলাফল কী হয়!
কিন্তু কিছুই হয়নি। এবং যার জেরে তৈরি হয়েও ভাঁড়ার ঘরে ঢুকে গিয়েছে ঘিয়ে ভাজা লাড্ডু। গেরুয়া আবির বের হয়নি। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘সমস্ত অঞ্চলের নেতাদের বলে দেওয়া হয়েছে, ওইসব এলাকার কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে তাঁরা যেন বিজেপি পার্টি অফিসে ভিড় না জমান।’ জানা গিয়েছে, বেলা বাড়ার পর ফলাফল কিছুটা অন্যরকম হওয়ার আভাস পাওয়া গেলে বিকেলের দিকে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার একটা পরিকল্পনা করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু দিনের শেষে সব হিসেব উল্টে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত করতে পারলেন না বিজেপির নেতারা।

Comments

Popular posts from this blog