Skip to main content

পথে কংগ্রেস

নয়াদিল্লি ও ভোপাল, ১১ ডিসেম্বর: বুথফেরত সমীক্ষা আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল। আর মঙ্গলবার ভোটযন্ত্র খুলতেই যুযুধান দু’পক্ষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখল মধ্যপ্রদেশ। কখনও এগিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস। আবার কখনও টেক্কা দিচ্ছে বিজেপি। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী রাজ্যের ২৩০ বিধানসভা আসনের মধ্যে ১১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। আর বিজেপি এগিয়ে ১০৮টি আসনে। ভোটপ্রাপ্তির হার যদি এরকমই থাকে, তাহলে কোনও দলই এককভাবে ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পারবে না। সেক্ষেত্রে গোবলয়ের এই রাজ্যে সরকার গড়তে নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে বিএসপি, সপা এবং অন্যান্য ছোট পার্টি ও নির্দল বিধায়কেরা।
গত নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ১৬৫টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ৫৮টি। কিন্তু, গত দু’বছর ধরে বিভিন্ন উপনির্বাচন ও স্থানীয় ভোটে কংগ্রেসের পুনরুত্থানের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল। ফলে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যে ধুন্ধমার লড়াই অপেক্ষা করছে, তা একপ্রকার প্রত্যাশিতই ছিল। সেইমতো গত বছরের থেকে আসন বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হতে চলেছে কংগ্রেসের।
১১৬টি আসন পেলে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায়। বিজেপি বা কংগ্রেস কোনও দলই ১১৬ বা তার বেশি সংখ্যর আসনে এগিয়ে নেই। ভোটগণনার গোড়ার দিকে কংগ্রেস প্রার্থীরা কমবেশি ১১০ আসনে এগিয়ে ছিল। আর বিজেপি ঘোরাফেরা করছিল ১০৫ আসনের মধ্যে। কিন্তু, বেলা বাড়তেই কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে কিছুটা এগিয়ে যেতে শুরু করে শিবরাজ সিংয়ের বিজেপি। ভোট গণনা শেষ পর্যন্ত যদি এই প্রবণতা জারি থাকে কোনও দলই রাজ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। বুধনি কেন্দ্রতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী তথা কংগ্রেসপ্রার্থীর থেকে ১৯ হাজার ২৯৩ ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ। বুরহানপুর ও বলাঘাট কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন যথাক্রমে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী অর্চনা চিতনিস ও কৃষিমন্ত্রী গৌরীশঙ্কর চতুর্ভূজ। শিবপুরী কেন্দ্রে ১০ হাজার ৭৮০ ভোটে এগিয়ে রয়েছে ক্রীড়ামন্ত্রী যশোধরা রাজে সিন্ধিয়া। অন্যদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম ভোপাল কেন্দ্র থেকে মাত্র ২৪৯ আসনে এগিয়ে রয়েছেন রাজস্বমন্ত্রী ঊমাশঙ্কর গুপ্ত।
এই পরিস্থিতিতে কোনও দলই যদি ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে না পারে, তাহলে মায়াবতীর বিএসপি, গন্দবন গণতন্ত্র পার্টি (জিজিপি), বহুজন সংঘর্ষ দল এবং নির্দল বিধায়কেরা মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়তে বড় ভূমিকা নিতে পারে। কারণ, তিনটি আসনে এগিয়ে রয়েছে বসপা। জিজিপি এগিয়ে রয়েছে দু’টি আসনে। নির্দল প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন তিনটি আসনে। এছাড়া, একটি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সংঘর্ষ দল। নীতিগত সিদ্ধান্তের জন্য বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সরকার তৈরি করা প্রায় অসম্ভব বসপার। কিন্তু, অন্যান্য ছোটদলগুলির বিজেপির সঙ্গে যাওয়া অসম্ভব নয়। তাই এই সমস্ত দলের সমর্থন নিয়ে মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়ার দৌড়ে থাকবে কংগ্রেস-বিজেপি দুই শিবিরই।
ইতিমধ্যে বিএসপি, সপা, জিজিপি ও নির্দলদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, সম্ভাব্য জোট সঙ্গী নিয়ে সংশ্লিষ্ট দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান কমল নাথ এবং প্রচার কমিটির প্রধান জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কমল নাথ যেখানে মায়াবতী-অখিলেশের সঙ্গে কথা বলেছেন, সেখানে এগিয়ে থাকা নির্দলদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন জ্যোতিরাদিত্য। তবে, রাজ্যে সরকার গড়লে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে দোটানায় পড়তে হবে কংগ্রেসকে। কারণ, এবারের নির্বাচনে জয়ের পিছনে কমল-জ্যোতিরাদিত্য দু’জনেরই বড় ভূমিকা ছিল। দিল্লির আকবর রোড মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কমল নাথকেই এগিয়ে রেখেছে প্রশ্ন করা হলে অত্যন্ত সূচারুভাবে তা এড়িয়ে যান জ্যোতিরাদিত্য। বলেন, ‘ঘোড়ার আগে টাঙ্গা লাগাবেন না। আগে রায় (ভোটের ফল) বেরতে দিন।’

Comments

Popular posts from this blog