৫ রাজ্যেই বিজেপির ভরাডুবি
রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের জয়
সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর: নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের প্রিয় স্লোগান কংগ্রেস মুক্ত ভারত আপাতত দূর অস্ত! উল্টে হিন্দি বলয়ে চূড়ান্ত ভরাডুবি হল শাসক বিজেপি’র। ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রের সর্ববৃহৎ দুই রাজ্যসহ তিনটি সরকারই হাতছাড়া হল। থমকে গেল দেশের মানচিত্রের গেরুয়াকরণের প্রবণতা। ১৫ বছর পর মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে ফিরে আসছে কংগ্রেস। পাঁচ বছর আগের হারানো জমি পুনরুদ্ধার করে রাজস্থানেও সরকার গড়ছে তারা। তেলেঙ্গানায় বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি। দক্ষিণ ভারত নয়, পূর্ব ভারত নয়, খোদ বিজেপির গড় হিন্দিভাষী আর্যাবর্তের তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য থেকে এভাবে উৎখাত হওয়া মোদি-অমিত শাহ’র কাছে বিরাট ধাক্কা। ঠিক লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এই তিন রাজ্যের পরাজয়ের ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী মোদি ম্যাজিক অবশেষে সমাপ্ত? বিজেপি বিরোধী হাওয়া প্রতিরোধ করতে মরিয়া লড়াই করেছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। বস্তুত কংগ্রেসের ৩-0 জয়ের মাঝখানে একা কুম্ভ হয়ে আজ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিলেন শিবরাজই। শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি সেই দুর্গও। ছত্তিশগড়ে যে বিজেপির জন্য এতবড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে তা কোনও সমীক্ষাই আঁচ করেনি। ৯০ আসনের ছত্তিশগড়ে বিজেপি ২০টি আসনও পায়নি। রাজনৈতিকভাবে ছত্তিশগড়ের ফল তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে কমল নাথ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, শচীন পাইলট, অশোক গেহলটের মতো হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নেতারা ছিলেন বিজেপিকে হারাতে। অথচ সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি সত্যিই ওই দুই রাজ্যে কারা জিততে চলেছে। পক্ষান্তরে কোনও ওজনদার নেতা না থাকা ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসকে জনগণ বিপুলভাবে ভোট দিয়ে সরকারে নিয়ে এসেছে। এই প্রবণতাটি বিজেপির কাছে আশঙ্কাজনক। কারণ এই বার্তা একটি পূর্বাভাস দিচ্ছে। সেটি হল, আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদির বিকল্প মুখ বিরোধী জোটে কেউ নেই, বিজেপির এই যুক্তি জনতার কাছে বিশেষ ফ্যাক্টর হবে না। বিকল্প সরকার কার নেতৃত্বে ক্ষমতায় এল, সেই হিসেব নাও করতে পারে ভোটার। কারণ ছত্তিশগড়ে প্রমাণ হয়েছে ক্ষুব্ধ মানুষ আগে সরকার বদল চায়। রামন সিংয়ের সমকক্ষ কংগ্রেসের কোনও মুখই ছিল না। তা সত্ত্বেও সেখানে বিজেপির শোচনীয় বিপর্যয় ঘটেছে। বস্তুত ছত্তিশগড় রাজ্য গঠন হওয়ার পর এই প্রথম সেখানে কংগ্রেসের সরকার গঠিত হতে চলেছে। রামন সিং এবং শিবরাজ সিং চৌহানের বিগত বছরগুলিতে জয়ের জন্য নরেন্দ্র মোদি অথবা হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রয়োজনই হয়নি। তাঁরা দু’জনেই ছিলেন জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী। সেই দু’জনই এবার পরাজিত। দুই রাজ্যেই লাগাতার তিনবার বিজেপি জিতেছে উন্নয়নের ইস্যুতে। এই কারণেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। আশঙ্কা করা হচ্ছে তাহলে কী ক্ষোভ আসলে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে? একমাত্র রাজস্থানে বসুন্ধরা রাজে সরকারের পতন ছিল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বাকি দুই রাজ্য নিয়ে আশাবাদী ছিল বিজেপি। কিন্তু তিন রাজ্যেই ধরাশায়ী হয়েছে মোদির দল।
আর এই জয় যতটা কংগ্রেসের জন্য প্রয়োজন ছিল, তার থেকে বেশি জরুরি ছিল রাহুল গান্ধীর জন্য। ২০১৪ সালের পর থেকে লাগাতার হারতে হারতে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। এই প্রথম এককভাবে একসঙ্গে তিন রাজ্য দখলের কৃতিত্ব দাবি করার যোগ্য হলেন তিনি। আগামী ভোটে বিরোধী জোটে কংগ্রেসের অনেকটাই নরম হয়ে অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল যদি আজও রাহুল হারতেন। কিন্তু তিন রাজ্যেই জয়ী হয়ে তিনি জোর বার্তা দিলেন। সেটি হল নরেন্দ্র মোদিকে হারানো সম্ভব। এবং সেই অশ্বমেধের ঘোড়ার রাশ টানলেন তিনিই। এই জয় কংগ্রেসের মনোবল বাড়াবে। আরও বাড়াবে বিরোধী জোটের শক্তি। এবং রাহুলের প্রেস্টিজ। কারণ মায়াবতী কিছু আসনে জয়ী হয়ে আশায় ছিলেন কংগ্রেস একক গরিষ্ঠতা না পেয়ে তাঁর দ্বারস্থ হবে। তার আর দরকারই পড়ছে না।
আজ তিন রাজ্যের ফলাফলের বিশ্লেষণে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হল ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের আদিবাসী, দলিত, কৃষক ও জাঠ অধ্যুষিত জনপদগুলিতে কংগ্রেসের বিপুল জয়। অর্থাৎ নব্বই দশকে ছিনতাই হয়ে যাওয়া কংগ্রেসের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক আবার ঘরে ফিরছে। তাহলে কী আজকের ফলাফলে কংগ্রেসের জন্য কোনও দুঃসংবাদই নেই? সবই খুশির খবর? একেবারেই নয়। এই খুশির দিনেও সোনিয়া-রাহুলের কাছে সবথেকে বড় যন্ত্রণা দিয়ে গেল মিজোরাম। উত্তর পূর্বের শেষ রাজ্যটিও কংগ্রেসের হাতছাড়া হল। বিজেপির একটাই সান্ত্বনা। কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত!
আর এই জয় যতটা কংগ্রেসের জন্য প্রয়োজন ছিল, তার থেকে বেশি জরুরি ছিল রাহুল গান্ধীর জন্য। ২০১৪ সালের পর থেকে লাগাতার হারতে হারতে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল। এই প্রথম এককভাবে একসঙ্গে তিন রাজ্য দখলের কৃতিত্ব দাবি করার যোগ্য হলেন তিনি। আগামী ভোটে বিরোধী জোটে কংগ্রেসের অনেকটাই নরম হয়ে অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল যদি আজও রাহুল হারতেন। কিন্তু তিন রাজ্যেই জয়ী হয়ে তিনি জোর বার্তা দিলেন। সেটি হল নরেন্দ্র মোদিকে হারানো সম্ভব। এবং সেই অশ্বমেধের ঘোড়ার রাশ টানলেন তিনিই। এই জয় কংগ্রেসের মনোবল বাড়াবে। আরও বাড়াবে বিরোধী জোটের শক্তি। এবং রাহুলের প্রেস্টিজ। কারণ মায়াবতী কিছু আসনে জয়ী হয়ে আশায় ছিলেন কংগ্রেস একক গরিষ্ঠতা না পেয়ে তাঁর দ্বারস্থ হবে। তার আর দরকারই পড়ছে না।
আজ তিন রাজ্যের ফলাফলের বিশ্লেষণে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হল ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের আদিবাসী, দলিত, কৃষক ও জাঠ অধ্যুষিত জনপদগুলিতে কংগ্রেসের বিপুল জয়। অর্থাৎ নব্বই দশকে ছিনতাই হয়ে যাওয়া কংগ্রেসের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক আবার ঘরে ফিরছে। তাহলে কী আজকের ফলাফলে কংগ্রেসের জন্য কোনও দুঃসংবাদই নেই? সবই খুশির খবর? একেবারেই নয়। এই খুশির দিনেও সোনিয়া-রাহুলের কাছে সবথেকে বড় যন্ত্রণা দিয়ে গেল মিজোরাম। উত্তর পূর্বের শেষ রাজ্যটিও কংগ্রেসের হাতছাড়া হল। বিজেপির একটাই সান্ত্বনা। কংগ্রেস মুক্ত উত্তর-পূর্ব ভারত!
Comments
Post a Comment