Skip to main content

Indian news 

Published by:"ALL NEWS LTD.

আরবিআই প্রধানের ইস্তফা, চাপে মোদি
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুশওয়ার পদত্যাগ, ফের ভাঙন এনডিএতে

সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১০ ডিসেম্বর: প্রথমে নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগাড়িয়া মেয়াদ সমাপ্ত হওয়ার অনেক আগেই পদত্যাগ করে ফিরে যান আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর জুন মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যমের ইস্তফা। এবার সবথেকে বড় ধাক্কা। লোকসভা ভোটের মাত্র কয়েকমাস আগে খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল ইস্তফা দিলেন আজ। মেয়াদ শেষের প্রায় ন’মাস আগে। যা মোদি সরকারকে চরম বিব্রত করেছে। দেশের অর্থনীতি নির্ধারণে যাঁদের ভূমিকা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই নামজাদা অর্থনীতিকরা একের পর এক মোদি সরকারের বিভিন্ন শীর্ষ পদ ছেড়ে পালাচ্ছেন। স্বাধীনতার পর সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সঙ্ঘাতের জেরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে ইস্তফা দিতে হয়নি কখনও। আজ উর্জিত প্যাটেলের ইস্তফার খবর প্রচার হওয়ার পরই প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তা রঘুরাম রাজন বলেছেন, এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। ভারতের পক্ষে এই প্রবণতা খুব উদ্বেগজনক। গোটা ঘটনায় দিশাহারা মোদি সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উর্জিত প্যাটেল একজন যোগ্য অর্থনীতিক। তিনি অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তঁার ইস্তফা আমাকে বিস্মিত করছে! অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও প্যাটেলের যোগ্যতাকে সর্বোচ্চ মানের বলে অভিহিত করেছেন। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সর্বোচ্চ কর্তার ইস্তফার আ঩গেই অবশ্য অর্থনীতি ধাক্কা খায়। শেয়ার বাজারে সকালে ধস নামে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির সম্ভাব্য খারাপ ফলের জল্পনাই এই ধসের কারণ বলে চর্চা চলছে। কিন্তু বিকেলে যখন স্বয়ং রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর ইস্তফা দিলেন, তখন আগামীকালের শেয়ার বাজারের গতিপ্রকৃতি নিয়ে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ আগামীকাল পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলও প্রকাশিত হবে। তবে শুধু আর্থিক প্রশাসনে ধাক্কা নয়, একইদিনে বড় রাজনৈতিক ধাক্কা খেয়েছে মোদি সরকার তথা বিজেপিও। এনডিএ ছেড়ে বিরোধী জোটের দিকে এগলেন বিহারের রাষ্ট্রীয় লোকসমতা পার্টির উপেন্দ্র কুশওয়া। আজ তিনি মোদি মন্ত্রিসভা থেকেই ইস্তফা দিয়েছেন। এনডিএর সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। 
এর পাশাপাশি আজ সংসদের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে বিজেপি বিরোধী ২১টি দলের বৈঠক হয়। বৈঠক হবে আগামীকালও। কুশওয়া আগামীকালের বৈঠকে যোগ দিলে তিনি হবেন মহাজোটের ২২তম সদস্য। একদিকে এনডিএর শরিক সংখ্যা কমছে, অন্যদিকে বিরোধী জোটে শরিক বাড়ছে। তবে একা উর্জিতই নন, সরকারের সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিবাদ ও সঙ্ঘাত চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য সেই গোপন খবরটি প্রথম ফাঁস করে বিদ্রোহ করেন। সম্প্রতি প্রকাশ্যেই বলেন, সরকারের উচিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ‘স্বশাসিত’ চরিত্র বজায় রাখতে সহায়তা করা। বস্তুত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বোর্ডে বহিরাগত সদস্যদের অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। যাঁরা সরাসরি সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তথ্য পরিসংখ্যান প্রকাশ করে দেখিয়ে দিয়েছিল, যে টাকা বাতিল করা হয়েছে, তার প্রায় সবই ব্যাঙ্কগুলিতে ফিরে এসেছে। এর অর্থ কালো টাকা বাজারে ছিলই না প্রায়। যা সরকারের পক্ষে চরম অস্বস্তির। কারণ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী লাগাতার বলে এসেছেন, নোট বাতিলে পাহাড়প্রমাণ কালো টাকা ধ্বংস হয়েছে। এরপর নীরব মোদি ও একের পর এক ব্যাবসায়ীদের ব্যাঙ্কের টাকা চুরি করে বিদেশে পালানোর ঘটনায় সরকার চাপে পড়লে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপরই দায় চাপানোর চেষ্টা হয়। সর্বশেষ সঙ্ঘাত হল, বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান বন্ধ করে দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এমনকী রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইনের বিশেষ ধারা প্রয়োগ করে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপকে আইনি বৈধতা দেওয়ার প্রশ্নে ইগোর লড়াই শুরু হয়েছিল। এবং পরিস্থিতি বর্তমানে এমন যে উর্জিত প্যাটেল একা নন, আগামীদিনে এই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অন্য শীর্ষ কর্তারাও গণইস্তফা দিতে পারেন বলে আশঙ্কায় রয়েছে কেন্দ্র। পাঁচ রাজ্যে ইতিবাচক ফলাফলই একমাত্র মোদি সরকারের ভাবমূর্তি ফেরাতে পারে। কিন্তু সেটা না হলে? সঙ্কট প্রবল!

Please share:⤴

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog